রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৫:০০:২৫

‘উচ্চশিক্ষায় দ্বিমুখী নীতি সরকারের’

‘উচ্চশিক্ষায় দ্বিমুখী নীতি সরকারের’

শরীফুল আলম সুমন : পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু গড় ব্যয় প্রায় কাছাকাছি। তবে পার্থক্য হলো, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় করছে সরকার আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের ব্যয় মেটাতে হচ্ছে তার পরিবারকে। সব মিলিয়ে এক শিক্ষাবর্ষে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ হাজার আসনে ভর্তি হতে পারে শিক্ষার্থীরা। এর বাইরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি কলেজে অনার্সে পড়ার সুযোগ পায় প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী। কিন্তু প্রতিবছর কয়েক লাখ শিক্ষার্থী এইচএসসি পাস করে।

তাদের মধ্যে সাধারণত যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় না তাদের বড় অংশই ভর্তি হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ৬৩ শতাংশই পড়ে বেসরকারিতে। তাদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের জন্য সরকারের তরফে কোনো খরচ নেই। এখন উল্টো ভ্যাট চাপিয়ে এসব পরিবারের খরচের বোঝা আরো বাড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষাবিদরা বলছেন, একই দেশে দুই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সরকার দ্বিমুখী আচরণ করছে। যার ফলে ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন দানা বেঁধেছে।

চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে সাত লাখ ৩৮ হাজার ৮৭২ জন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এবার আসন সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। আর সরকারি মেডিক্যাল, ডেন্টাল, টেক্সটাইল কলেজ ও মেরিন একাডেমিতে আসন রয়েছে মাত্র চার হাজার ২৯৮টি। সব মিলিয়ে সরকারি খরচে পড়ার সুযোগ পাবে ৫০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। অন্যদের ভরসা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।

ব্যয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চার বছরের অনার্স কোর্স পড়তে একজন শিক্ষার্থীর ব্যয় হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। বাকি টাকা সরকার দেয়। আর ৮৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সেশন চার্জসহ যাবতীয় ফি মিলিয়ে সর্বোচ্চ টাকা নেয় দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে চার বছরের অনার্স কোর্স করতে একজন শিক্ষার্থীকে ব্যয় করতে হয় সাত থেকে ১০ লাখ টাকা। এরপরের অবস্থানে রয়েছে আট থেকে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়। একই কোর্স করতে সেগুলোতে প্রয়োজন হয় চার থেকে ছয় লাখ টাকা। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খরচ দুই থেকে চার লাখ টাকার মধ্যে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ট্রাস্টি সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়, উচ্চবিত্ত পরিবারের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে এখন দেশের বাইরে পড়ালেখা করে। যারা দেশে থাকে তাদের বেশির ভাগের পছন্দ নির্দিষ্ট দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। কারণ পড়ালেখার মানের দিক থেকে তারা এগিয়ে। তবে সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় না হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকের পক্ষেই সেগুলোতে পড়া সম্ভব হয় না। তাদের ভরসা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, তাদের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া একজন শিক্ষার্থীর পেছনে এক বছরে কর্তৃপক্ষকে ব্যয় করতে হয়েছে ৮৪ হাজার ১৬০ টাকা। আর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই লাখ ২০ হাজার ৮৭১ টাকা, বুয়েটে ৭৭ হাজার ২৯৫ টাকা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৩ হাজার ৩৬৪ টাকা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮২ হাজার ২২৫ টাকা। একই বছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেছনে মাথাপিছু গড় ব্যয় হয়েছে ৮১ হাজার ২০৫ টাকা। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় সরকার করলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুরো ব্যয়ই মেটাতে হচ্ছে তাদের পরিবারকেই।

শিক্ষার্থীরা বলছে, 'সরকার আমাদের পড়ালেখার জন্য যথেষ্ট পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে পারেনি। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হচ্ছে। আমরা এত দিন সরকারের কাছ থেকে এক টাকাও চাইনি। যেভাবেই হোক আমাদের পরিবারই তা জোগাড় করেছে। অথচ দুই-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের উচ্চবিত্ত পরিবারের কথা চিন্তা করেই আমাদের মতো মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ওপর ভ্যাট আরোপ করছে সরকার। একই দেশে কেউ উচ্চশিক্ষা পাবে নামমাত্র খরচে, আর কাউকে গলাকাটা দাম দিয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে হবে, তা তো হতে পারে না। সবাই তো আমরা এ দেশেরই নাগরিক। সবার সুযোগ-সুবিধাও একই হওয়া উচিত। তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রে এই বৈষম্য কেন?'

জানা যায়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে ১২ সেমিস্টারের চার বছরের বিবিএ কোর্স শেষ করতে প্রয়োজন হয় পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। অথচ একই বিষয়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর আট সেমিস্টারের চার বছরের কোর্সে পড়তে মাসিক বেতন দিতে হয় ৩০০ টাকা করে, বছরে একবার ভর্তি ফি সাত হাজার টাকা, বছরে দুইবার সেমিস্টার ফি এক হাজার ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে কোর্স শেষ করতে একজন শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই খরচ আরো কম।

নাম প্রকাশ না করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি প্রতিবেদককে বলেন, 'সরকার যখন আমাদের একটি টাকাও দেয় না তখন তারা নেবে কেন? আর ভ্যাট সব সময়ই ভোক্তা দেয়। এনবিআর হঠাৎ এক ব্যাখ্যা হাজির করল, কিন্তু এর তো কোনো যুক্তি নেই। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় সতিক্যার অর্থেই অলাভজনকভাবে চলে, তাদের তো এই ভ্যাট দিতে হলে ফি বাড়াতেই হবে। নয়তো মানসম্পন্ন শিক্ষা কিভাবে দেবে? আর সরকার বলছে, অনেকেই অনিয়ম করছে, উচ্চ হারে ফি নিচ্ছে। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কেন ভ্যাট বসাতে হবে? তাহলে কি ইয়াবা ব্যবসায়ীরাও ভ্যাট দিয়ে পার পেয়ে যাবে? সরকার হলমার্কের মতো প্রতিষ্ঠানের তিন-চার হাজার কোটি টাকা ছেড়ে দেয়, অথচ বছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভ্যাট নিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি টাকা পাবে, তাই ছাড়তে পারছে না। আসলেই এই ভ্যাট একটি পরিবারের জন্য বোঝা।'

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ড. কাজী আনিছ আহমেদ এই প্রতিবেদককে বলেন, 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে বেশি বিকশিত আমেরিকায়। বিশ্বের ১০০টি প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধেকই আমেরিকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের টিউশন ফিসও আকাশচুম্বী। কিন্তু তাদের সরকার বসে নেই। ওই দেশের রাষ্ট্র ও রাজ্য সরকার পৃথকভাবে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করছে। সেই বৃত্তি নিয়েই ওই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। আমাদের দেশেও এ ধরনের ব্যবস্থা করতে পারে সরকার।'

আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ট্রাস্টি প্রতিবেদককে বলেন, 'সরকার পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সুবিধাই দিতে পারে। শুধু সরকার নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও কিছু করতে পারে। সরকার যে পরিমাণ বৃত্তি দেবে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও বাধ্যতামূলকভাবে ওই পরিমাণ টাকা ছাড় দিতে পারে। তাহলেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবারের ওপর থেকে বোঝা চলে যাবে। সমতা আসবে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও।'

ইউজিসি সূত্র জানায়, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি-ভবন সবই করে সরকার। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শেষে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপরই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। শিক্ষকরা সরকারের কাছ থেকে পায় নানা রকমের প্রশিক্ষণও। অথচ রাজধানীতে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য উদ্যোক্তাদের পাঁচ কোটি টাকা জমা দিয়ে অনুমোদন নিতে হয়। শুরুতে অস্থায়ী স্থাপনায় কাজ শুরু করতে পারে তারা। তবে প্রতিষ্ঠার সাত বছরের মধ্যে যেতে হয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে। কমপক্ষে এক একর জায়গায় এই ক্যাম্পাস করতে হয়। আর শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ কোনো কিছুরই দায়িত্ব নেয় না সরকার। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। এখন তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের উপাচার্য। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, 'সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা পয়সাও খরচ করে না। অন্তত এক একর জায়গা তো দিতে পারে। অথচ সেটা না দিয়ে আবার অযৌক্তিকভাবে ভ্যাট বসিয়েছে। আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম তখন যা বেতন ছিল, আমার ছেলেও তা দিয়েছে। এখন আমার নাতিও তা দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য এমনকি শ্রীলঙ্কা, ভুটানে উচ্চশিক্ষার জন্য তেমন কোনো টাকা খরচ করতে হয় না শিক্ষার্থীদের। অথচ আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন বেসরকারিভাবে পড়ার চেষ্টা করছে, তখন সেখানে বাধার সৃষ্টি করছে সরকার। এটা অবশ্যই সরকারের দ্বিমুখী আচরণ।'

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক উদ্যোক্তা জানান, অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন ইভনিং প্রোগ্রাম ও বিভিন্ন কোর্স চালু করেছে। সেখানেও নেওয়া হয় উচ্চহারে ফি। সব সুযোগ-সুবিধা দিয়েও সেদিকে সরকারের নজর নেই।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক্সিকিউটিভ এমবিএ করার জন্য দুই বছরের কোর্সে দিতে হয় দুই লাখ ১৬ হাজার ২৫০ টাকা। মাস্টার্স ইন প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিংয়ে খরচ হয় দুই লাখ ৩৯ হাজার টাকা। ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন করতে তিন-চার বছরের কোর্সে প্রয়োজন হয় ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। এক বছরের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট কোর্স করতে প্রয়োজন হয় ৯৮ হাজার টাকা। দুই বছরের মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ করতে প্রয়োজন হয় এক লাখ ১০ হাজার টাকা। অথচ এসব কোর্সের শিক্ষার্থীদের এক টাকাও ভ্যাট দিতে হয় না।

এসব বিষয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক কাজী ফারুক আহমেদ এই প্রতিবেদককে বলেন, 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন সরকারই দেয়। তারা পর্যাপ্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করতে না পারায়ই বাড়ানো হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তাহলে তো সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরও কোনো না কোনো সুবিধা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সব জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগের কথা বলেছেন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় করা অনেক খরচের ব্যাপার। সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে জমি ও অবকাঠামো সুবিধা দিয়ে স্থাপনের চিন্তা করা উচিত। কারণ বেসরকারিতে যারা পড়বে তারা তো আমাদের দেশেরই স্টুডেন্ট। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক। সেখানে চার্টার অনুযায়ী ভ্যাট হতে পারে না। আর সরকার যে অনিয়মের কথা বলে সেটা কি তারা ইচ্ছে করলে খুঁজে বের করতে পারে না? এটা আসলে সদিচ্ছার অভাব।-কালেরকণ্ঠ
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে