শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:৩৯:৫০

বহুল আলোচিত বিচারপতি মানিকের যেভাবে বিদায়

বহুল আলোচিত বিচারপতি মানিকের যেভাবে বিদায়

ঢাকা : দীর্ঘ ৩৮ বছরের আইন ও বিচার পেশার অবসান ঘটলো সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বহুল আলোচিত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের। হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু, ১৯৭৮ সালে। সমালোচনা তার কখনই পিছু ছাড়েনি। শেষ মুহূর্তে এসে জড়িয়েছেন আরো বড় বিতর্কে।

তিনি সর্বোচ্চ বিচার প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। আগামী ১ অক্টোবর তিনি অবসরে যাচ্ছেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস কাটালেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। তবে কোনো এজলাসে নয়, নিজ চেম্বারে বসে দিন পার করেন তিনি।

সাপ্তাহিক ছুটি ও সুপ্রিম কোর্টের বাৎসরিক অবকাশ আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। অবকাশ শেষে ১ নভেম্বর নিয়মিত আদালত বসবে। সেই হিসেবে বৃহস্পতিবারই ছিল বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর শেষ কর্মদিবস।

অবসরে যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অভিশংসন চেয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী।

প্রথা অনুসারে উচ্চ আদালতের কোনো বিচারকের দায়িত্ব গ্রহণ ও অবসরের আগে তাকে বেঞ্চে (এজলাস) সংবর্ধনা দেওয়া হয়ে থাকে। তা দেয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যার্টনি জেনারেল।

তবে শেষ সময়ে কোনো বেঞ্চে ছিলেন না বিচারপতি শামসুদ্দিন। প্রধান বিচারপতির অভিশংসন চেয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির বরাবরে পাঠানো চিঠিতে তিনি দাবি করেন, ৮ সেপ্টেম্বর থেকে তাকে বিচারিক কার্যক্রম থেকে সরিয়ে রাখা হয়।

সংবর্ধনার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘যেহেতু তিনি বেঞ্চে আসীন হননি, তাই বিদায় সংবর্ধনা জানানো সম্ভব হয়নি।’

তবে বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবসে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীকে তার কক্ষে গিয়ে বিদায় সম্ভাষণ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা।

তার কক্ষে গিয়ে দেখা করে বিদায়ী সম্ভাষণ জানান- ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, আবদুল বাসেত মজুমদার, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, পরিমল চন্দ্র গুহ, শ ম রেজাউল করিম, লায়েকুজ্জামান মোল্লা, মনজিল মোরসেদ ও ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর প্রমুখ।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘যেহেতু তিনি কোনো এজলাসে ছিলেন না, সে কারণে তার চেম্বারে গিয়েই বিদায়ী সম্ভাষণ জানানো হয়েছে।’

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী ১৯৭৮ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ইয়াসমিন হত্যা মামলায়ও ছিলেন তিনি।

২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান শামসুদ্দিন চৌধুরী। ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ আপিল বিভাগে নেওয়া হয় তাকে।

হাইকোর্টের বিচারক থাকাকালে সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী, কর্নেল তাহেরের গোপন বিচার, বিজিএমইএ ভবন সংক্রান্ত মামলাসহ বহু আলোচিত রায় তার হাত দিয়ে আসে।

একই সঙ্গে সব সময়ই কিছু না কিছু বিতর্ক দিয়ে আলোচনায় থেকেছেন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী। রাষ্ট্রের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, গণমাধ্যম সম্পাদকরা তার আদালতে গিয়ে কাঠগড়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেছেন। শুনেছেন ভর্ৎসনা ও তীর্যক সব মন্তব্য, যা বিচারপতি শামসুদ্দিনের পেশাদারিত্বকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে