সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:২০:০২

‘বাংলাদেশের থেকে পশ্চিমবঙ্গের পাঠকরা বেশি মৌলবাদী’

‘বাংলাদেশের থেকে পশ্চিমবঙ্গের পাঠকরা বেশি মৌলবাদী’

সমরেশ মজুমদার : বাংলাদেশের পাঠকদের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু পাঠকরা অনেক বেশি মৌলবাদী বলে মনে করেন দুই বাংলার বিশিষ্ট সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার।

রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশি বইমেলায় 'বইয়ের পাইরেসি' শীর্ষক একটি আলোচনা চক্রে অংশ নিয়ে বিশিষ্ট এই সাহিত্যিক বলেন, 'আমাদের বই যখন বাংলাদেশের পাঠকরা হাতে পান তখন তারা বিচার করেন না এটা কোন ধর্মের লেখক। তারা বিচার করেন এটা পাঠযোগ্য কিনা, কাহিনী তার ভাল লাগছে কি না কিংবা পড়তে তার আরাম লাগছে কি না।

কিন্তু বাংলাদেশের লেখকদের বই আমাদের পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু পাঠকরা আম্মা, ফুপা, নামাজ এই শব্দগুলি যখন দেখতে পায় তখন তাদের মধ্যে একটা অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় এবং এই প্রতিক্রিয়ার কারণেই বাংলাদেশের অনেক লেখকের বই এখানকার পাঠকদের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আমি পরিস্কার করে বলছি বাংলাদেশের পাঠকদের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু পাঠকরা অনেক বেশি মৌলবাদী। এই ২০১৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি বলতে হয়- তবে বলব আমরা অনেক বেশি মৌলবাদী, আমাদের পাঠকরা অনেক বেশি মৌলবাদী। আমাদের পাঠকরা গ্রহণ করতে পারছেন না।'

পাইরেশি রোধে একটি উদাহরণ টেনে সমরেশ মজুমদার বলেন 'পশ্চিমবঙ্গের যাঁরা মুসলমান লেখক ছিলেন যেমন মুস্তাফা আলি সিরাজ সাহেব ছাড়া এখানকার পাঠকরা কয়জনকে গ্রহণ করতে পেরেছেন...হ্যাঁ যাদের গ্রহণ করতে পেরেছেন তাদের লেখায় ওই সব মুসলিম শব্দগুলি নেই। ফলে ওঁদের বই এখানে (পশ্চিমবঙ্গ) এসে পাইরেসি হবে এই সম্ভাবনা খুবই কম। তবু এই জিনিস বন্ধ করতেই হবে। আমরা যারা প্রবীন আছি তারা চাই এটা শিগগির বন্ধ হোক।

তার কারণ আজ আমরা বিশ্বের যে দেশেই যাই না কেন সেখানে যদি একজন বাঙালী থাকেন, যাঁর কাছে বাংলা বই আছে...তাঁর সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখি তিনি একসময় বাংলাদেশে ছিলেন অথবা বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক নন। বাংলাদেশের নাগরিকরা আমাদের শেষ বই কোথায় লেখা হয়েছে সেই খবরটাও রাখেন। পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকরা কিন্তু তা করেন না।

এদিনের এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান শায়ক, পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা খবর ৩৬৫-এর সম্পাদক পূষণ গুপ্ত, কলকাতা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড-এর তরফে সুধাংশু দে, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কাউন্সেলর (কনস্যুলার) মনসুর আহমেদ, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির কর্তা মেসবাহউদ্দিন আহমেদ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।-বিডিপ্রতিদিন
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে