বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:৫৭:২৪

ভাগ্য খুলছে নিয়োগ না পাওয়া ১০ হাজার শিক্ষকের

ভাগ্য খুলছে নিয়োগ না পাওয়া ১০ হাজার শিক্ষকের

নিউজ ডেস্ক : ভাগ্যভাগ্য খুলছে ১০ হাজার রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের।  বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (নতুন জাতীয়করণকৃত) সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য তৈরিকৃত প্যানেলভুক্তদের আগামী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

রায়ের পর শিক্ষকদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, মোট ৩৬৭টি রিট আবেদনের বিষয়ে রায় দিয়েছেন আদালত।  এসব আবেদনে প্রায় ১০ হাজারের মতো প্যানেলভুক্ত সদস্য রয়েছেন।  আবেদনকারী এসব সদস্যকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

তিনি বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়।  এর মাধ্যমে প্যানেলভুক্তদের নিয়োগে যে আইনি জটিলতা ছিল তা আর থাকলো না।

রিটকারীদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কাজী আকবর আলী, অ্যাডভোকেট আশুতোষ কুমার সানা প্রমুখ।

জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শূন্য পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।  উপজেলাভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তির ৩ নম্বর শর্তে উল্লেখ করা হয়।  

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ওপর ভিত্তি করে ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৪২ হাজার ৬১১ জনকে নিয়োগের লক্ষ্যে একটি প্যানেল তৈরি করা হয়। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতর এক পরিপত্রে ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগের কথা জানায়।

সে সময় প্রায় ১৪ হাজারের মতো নিয়োগও দেয় সরকার।  পরে ২০১৩ সালে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।  এরপর নিয়োগ দেয়া বন্ধ করে দেয় সরকার।  এতে হতাশ হয়ে পড়েন চাকরি প্রত্যাশী প্যানেলভুক্তরা।

পরে নিয়োগ বঞ্চিত ও প্যানেলভুক্ত সদস্যদের মধ্য থেকে কয়েক হাজার  ইউনিয়নভিক্তিক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ও নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত হাইকোর্টে পৃথক রিট করেন।

এর আগে একটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৮ জুন রিট আবেদনকারী ১০ জনকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়ে ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।

ওই রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাদের নিয়োগ দিতে বলা হয়।  পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অন্যরা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে।  গত ৭ মে তা খারিজ করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।

সরকারপক্ষের করা আপিল খারিজ হওয়ার পর প্যানেলভুক্ত ১০ শিক্ষক গত ১৮ মে রায়ের কপি হাতে পেয়ে তা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করে নিয়োগ চেয়ে আবেদন করেন।  কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ওই ১০ শিক্ষককে নিয়োগ দেয়নি।  বিষয়টি নিশ্চিত করেন তাদের আইনজীবী সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া।

রুল শুনানিকালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এক প্রতিবেদনে জানায়, চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শূন্য পদের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৪৪টি।  পাবর্ত্য তিন জেলা ছাড়া ৬১টি জেলায় এ সময় পর্যন্ত প্যানেল থেকে ১০ হাজার ৪৯৭ প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
১৭ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে