সোমবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:০০:২২

মায়ের লেখায় স্বপ্নপূরণ

মায়ের লেখায় স্বপ্নপূরণ

নিউজ ডেস্ক : মা কাগজে লিখতেন। আর মেয়ে তাই দেখে পড়া তৈরি করত। ক্লাসে বসে পড়া বুঝতে পারত না বলে বন্ধুরাও তাকে লিখে দেখিয়ে দিত। তা না হলে বাধাটা পেরোনো প্রায় অসম্ভবই ছিল। কারণ, জন্মের পর থেকেই আফসানা মিমি বলতে ও শুনতে পারে না। এত সব প্রতিবন্ধকতা পার হয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৫০ পেয়েছে।

মিমি (১৫) ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমানপুর খন্দকারপাড়ার মোমিন হোসেনের মেয়ে। মোমিন পেশায় সাইকেল মিস্ত্রি। আর মা গৃহিণী। মা রহিমা বেগম জানান, মিমি জন্ম নেওয়ার পর থেকেই মূক ও বধির। ছোট মেয়ে সুমাইয়া খন্দকার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার প্রতি মিমির আগ্রহ দেখে তাকে বাড়ির পাশে মসজিদে পাঠানো হয়। পরে রথখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সে ভর্তি হয়। সেখানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর তাকে কোটচাঁদপুর বালিকা বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এই বিদ্যালয় থেকেই সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

কথা বলতে না পারায় ছোটবেলা থেকেই রহিমাকে পড়া দেখিয়ে দিতে হয়েছে। রহিমা বেগম নিজে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। কিন্তু মেয়ের কারণে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া তিনি শিখে ফেলেছেন। বাড়িতে বসে তিনি খাতায় সব পড়া লিখে দিতেন। সেগুলো দেখে দেখে মেয়ে লিখত। এভাবেই সে প্রতিদিনের পড়া তৈরি করেছে। লেখার পর অঙ্গভঙ্গি করে সেগুলো বুঝিয়েও দিতে হয়েছে।

ক্লাসে পড়া না বুঝলেও এক দিনও ক্লাস বাদ দেয়নি মিমি। এমনটি প্রাইভেটও পড়েছে সে। সে সময় বন্ধুরা লিখে লিখে তাকে পড়া বুঝিয়ে দিত। অনেক সময় মিমির মাকেও বিদ্যালয় যেতে হয়েছে। এ কষ্ট করে লেখাপড়া করে সে এমন ফলাফল করায় ভীষণ খুশি রহিমা বেগম।

ভবিষ্যতে কী হতে চাও জানতে চাইলে মিমি কাগজে লিখে জানায়, কলেজে ভর্তি হয়ে পড়ালেখা করে সরকারি চাকরি করতে চায় সে।
মিমির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসাহক আলী জানান, মিমিকে পড়ানো খুবই কষ্ট হয়েছে তাঁদের। তারপরও তাঁরা চেষ্টা করেছেন। তবে মিমিকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে তার বন্ধুরা। এ কারণেই সে ভালো ফলাফল করেছে।-প্রথমআলো
৫ জুন, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএএস/একে

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে