রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:২১:৩৭

থেমে থাকেনি খালেদা

 থেমে থাকেনি খালেদা

নিউজ ডেস্ক : বেঁচে থাকার জন্য মানুষ কত কিছুই না করে। স্বপ্ন দেখে স্বামী, সন্তানকে নিয়ে সুখের ঘর বাঁধার। সেই ঘরে অব্যক্ত বাসনা-কামনার যত ফয়সালা। কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তব যে কত কঠিন তা উপলব্ধি করার সময় হলেই বুঝা যায় যখন কেউ দাঁড়িয়ে যায় চরম বাস্তবের মুখোমুখি। জীবনযুদ্ধের কঠিনতম সময়ে বেঁচে থাকাটাই তখন মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন দু’মুঠো ভাতের।

অন্ন-বস্ত্রের সংস্থানে বাধ্য হয়েই প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে নিজের প্রয়োজনকে মেটাতে চায় মানুষ। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুরুষ বলয় ভেঙে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে অকূল সাগরে জীবনযুদ্ধে ঝঁাঁপ দেয় নারীরাও। সুকোমল হাত নিমেষেই হয়ে ওঠে বজ্রকঠিন।

দৃঢ়কণ্ঠে তখন নারীকেও বলতে শোনা যায়, ‘আমিও মানুষ, আমাকে বাঁচতে হবে। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে যে নারী কখনই ভাবেননি তাকে রিকশা চালাতে হবে। অথচ নির্মম বাস্তবতা আর পরিবারের মুখে দু’মঠো ভাত তুলে দিতে বেছে নিতে হয় তিন চাকার বাহন।

এমনই এক সাহসী নারী জামালপুরের খালেদা। যে জীবনযুদ্ধে হার মানেনি, হার মানিয়েছে কঠিন বাস্তবতাকে। যে নারী স্বপ্নেও ভাবেনি তাকে রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে হবে। অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাস, তিন চাকার বাহন রিকশাই আজ তার পরিবারের অন্ন-বস্ত্রের একমাত্র অবলম্বন। হাত পাতেনি কারো কাছে, ভিক্ষার বাটি নিয়ে নেমে যায়নি রাস্তায় কিংবা পা রাখেনি নিষিদ্ধ কোনো পল্লীতে।

সাহসী বীর এই নারী থাকেন জেলা সদরের টিক্কাপট্টিতে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার আগেই অন্য নারীর প্রলোভনে ছেড়ে গেছেন স্বামী। ২৩ বছরের এ যুবতী পৌরশহরে প্রায় ১ বছর ধরে রিকশা চালিয়ে ৩ সদস্যের পরিবারের যোগান দিচ্ছেন। মানসিক বিকারগ্রস্ত বিধবা মা মিনারা বেগম ও ২ বছরের সন্তানের মুখে দু’বেলা আহার জুটাতে বেছে নিয়েছেন কঠিনতম পুরুষের পেশা। তবু এতোটুকুও আক্ষেপ নেই তার। অন্যের করুণা ছাড়া পরিশ্রম আর স্বাধীনতায় বেঁচে থাকতে চান। সমাজ কী মনে করলো আর না করলো পেছনে তাকাবার সময় নেই।

জামালপুর জেলা শহরে এ দৃশ্য দেখে চোখটা থমকে যায় আঁচমকা। কথা বলতেই ফ্যালফ্যাল নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে উঠলেন, ‘হায়রে পুরুষ জাতি।

১৮.০৮.২০১৩/এমটিনিউজ২৪.কম/এমআর/এসএম/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে