সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:৩৮:৩৪

স্বর্ণের ট্রেনের ইতিকথা

স্বর্ণের ট্রেনের ইতিকথা

এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : আস্ত একটা স্বর্ণের ট্রেন! ঘটনা কি সত্যি? হ্যাঁ, পাহাড় খুঁড়ে এমনই একটি স্বর্ণের ট্রেনের সন্ধান মিলেছে।  ঘটনাটি পোল্যান্ডে, যা কিনা ৭০ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আচমকাই মাঝপথ থেকে টেনটি উধাও হয়ে গিয়েছিল।

১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধের সময় হাঙ্গেরি থেকে প্রচুর অস্ত্র, বন্দুক, মূল্যবার রত্ন এবং স্বর্ণ নিয়ে জার্মানি যাচ্ছিল ট্রেনটি।  ১৫০ মিটার লম্বা ওই ট্রেনটি জার্মান শহর রোক্লতে পর্বতের টানেলের মধ্যে প্রবেশ করে।

সে সময় শহরটির নাম ছিল ব্রেসলউ।  কিন্তু টানেল থেকে ট্রেনটি আর বের হয়নি।  খুব অদ্ভুতভাবেই তখন থেকে ট্রেনটির কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না।  পরে টানেলের মুখগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।  ঘটনাটি প্রায় ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল।  তবে নতুন করে সেই ঘটনা উঠে এল দুই ব্যক্তিকে ঘিরে।

৭০ বছর পর সেই ট্রেনটির খোঁজ মিলেছে বলে দাবি করেন জার্মানির দুই ‘ট্রেজার হান্টার’, যাতে ৩০০ টন স্বর্ণ মজুত রয়েছে বলে তাদের দাবি।  কিন্তু কোথায় ট্রেনটির খোঁজ মিলল তা এখনো স্পষ্টভাবে জার্মান সরকারকে জানাননি তারা।  সন্ধান দেয়ার বিনিময়ে ট্রেনটিতে মজুত স্বর্ণের ১০ শতাংশ তাদের দিতে হবে, এ শর্ত দিয়েছেন তারা।

পোল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ গুপ্তধন শিকারিদের কথিত স্বর্ণের ট্রেন খোঁজা বন্ধ করতে বলেছে।  কারণ এতে বিপজ্জনক বস্তু থাকতে পারে।  গুপ্তধন ভর্তি ট্রেন খুঁজে পাওয়ার দাবি করার পর ওই অঞ্চলে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়।

পোল্যান্ডের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, যতক্ষণ না নিয়মানুযায়ী ট্রেন হারানোর স্থানটি নিরাপদ ঘোষণা করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত গুপ্তধন খোঁজা থেকে বিরত থাকতে হবে।

পিতর জুচোভস্কি গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ট্রেনটির মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে লুকিয়ে রাখা বিপজ্জনক বস্তুও থাকতে পারে। ট্রেনটি একটি চোরা ফাঁদও হতে পারে।

স্থানীয়দের মতে, গুপ্তধন ভর্তি ট্রেনটি ভালব্রিচিজ থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সিয়াজ প্রাসাদের কাছে হারিয়ে গিয়েছিল জানা যায়।

এদিকে হারিয়ে যাওয়া ট্রেনটিতে অস্ত্র, রত্ন ও অন্যান্য মূল্যবান উপকরণসহ চিত্রকর্ম ছিল।  সেগুলোর দাম প্রায় ২০ কোটি ডলার।  গত শুক্রবার পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে এ তথ্য জানানো হয়।  

বলা হয়, এক পোলিশ ও এক জার্মান ওই রেল গাড়িটির অবস্থান শনাক্ত করার দাবি করেন।  সেখান থেকে যেসব জিনিস আহরিত হবে, তার ১০ শতাংশ তারা দাবি করেছেন।  ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই সাঁজোয়া ট্রেনটি পূর্ব জার্মানির শহর ব্রেসলও থেকে হারিয়ে যায়।  ব্রেসলও এখন পোল্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত।  শহরটির বর্তমান নাম ওরোকল।

ট্রেনটি নাৎসিদের লুট করা মালামাল বহনে ব্যবহৃত হতো।   ‘স্বর্ণ ট্রেন’-এর ব্যাপারটি হলো, ১৯৪৫ সালে যুক্তরা​ষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ও সোভিয়েত বাহিনী জার্মানির রাজধানী বার্লিনের দিকে এগিয়ে আসে।  তখন নাৎসি বাহিনী বুদাপেস্ট থেকে জার্মানিতে ২৪ বগির ট্রেনটি পাঠায়।

সেটিতে তাদের পরিবারের ধনসম্পদ ছিল।  এছাড়া হাঙ্গেরির ইহুদিদের থেকে কেড়ে নেয়া বিভিন্ন মূল্যবান চিত্রকর্ম ছিল।  কিন্তু মাঝপথে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ট্রেনটির যাত্রা ব্যাহত করে।  নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে লুটে অংশ নেয়া এক ব্যক্তি এ ব্যাপারে বিরোধীপক্ষকে সাহায্য করেছে বলে পরবর্তী তদন্ত বেরিয়ে আসে।
২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে