সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৪:৪৮:০৮

পাগলটার সাথে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি

পাগলটার সাথে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি

পাঠকই লেখক ডেস্ক : লাল শাড়িতে বিয়ের কনে সেজে বসে আছি। পার্লার থেকে সাজিয়ে চেহারাটাকে সাদা করে দিয়েছে। আমার কাছে আমার শ্যামলা চেহারাটা দেখতেই ভাল লাগে। লাল কালারের শাড়িটাও ভাল লাগছে না। এটা কারো হৃদয় হরন করে সারা গায়ে রক্ত মেখে থাকার প্রতীক হিসেবে কাজ করছে। সবার সামনে আছি তাই কাঁদতেও পারছি না।

বুকে জমাট বাঁধা কষ্ট নিয়ে, মুখে একটা মুচকি হাসি একে কাঠের পুতুলের মত বসে আছি। সবার মুখে হাসি দেখতে এইটুকু তো আমাকে করতেই হবে। নাহলে নারী জাতির বৈশিষ্ট্য আমার থেকে বাদ পড়ে যাবে যে। সবার মুখে হাসি ফুটাতে পারব বললে ভুল হবে। অন্তত একজন এই মুহূর্তে কাঁদছে।

পাগলটা অনেক ইমোশনাল। দুষ্টামি করে কিছু বললেও কেঁদে ফেলত। তখন আমি বলতাম "এত ইমোশনাল বরের সাথে আমি কিভাবে বাকি জীবনটা কাটাব?" তারপর হেসে দিত।

একদিন খুব কাদিয়েছিলাম অন্য কাওকে বিয়ে করব বলে। কিন্তু কে জানত সেটাই সত্যি হতে যাচ্ছে। আমাকে ডাকত "পাখি" বলে আর আমি ডাকতাম "পাখির ডাবল বিএফ" বলে। ডাবল বিএফ মানে হচ্ছে বেস্ট ফ্রেন্ড আর বয় ফ্রেন্ড। সেই অভিমান, ভালবাসা, জোকস সবকিছুই স্বপ্ন হয়ে গেল জীবনের নির্মম সত্যির সামনে।

ছোটবেলায় অনেক দুষ্টু থাকলেও এখন মা-বাবার কথা শুনি। মা-বাবা দুজনেই অসুস্থ, তাদের কথা না শুনলে কষ্ট পাবে এবং আরো অসুস্থ হয়ে যাবে। ওদের কষ্ট দিব না বলেই অন্য কাওকে বিয়ে করতে মনকে বাধ্য করছি।

যাইহোক, বিয়ে করে নতুন আরেকটা বাড়িতে চলে এলাম। আমার স্বামী এবং তার পরিবার অনেক ফ্রেন্ডলি কিন্তু আমি ওদের আপন এখনো হতে পারি নি। জানি না পারব কিনা।

বারবার শুধু মনে হয় সেই পাগলটার সাথে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি। জানি না পাগলটা এখনো আমাকে ক্ষমা করেছে কিনা, তবে আমি আমাকে কোনদিন ক্ষমা করতে পারব না। পাগলটার জন্য দোয়া করি যেন অনেক ভাল একজনকে তার জীবনসঙ্গীনী হিসেবে পায় যে কখনোই আমার মত নিষ্ঠুর হবে না.........

আমি দুঃখিত যদি কারো জীবনের সাথে মিলে যায়। এটা আমার লেখা নিছক গল্প মাত্র।

লেখিকা : দিলরুবা আহমেদ পরী
বি:দ্র:  সম্পাদক দায়ী নয়
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে