শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:১৩:৩৬

জেনে নিন, বিশ্ব ইজতেমার সঠিক ইতিহাস

জেনে নিন, বিশ্ব ইজতেমার সঠিক ইতিহাস

ইসলাম ডেস্ক: রাজধানী ঢাকার পাশেই টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমাকে উদ্দেশ্য করে যে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সমাগম ঘটে তা হটাৎ করেই হয়ে উঠেনি। নিবেদিত প্রাণ তাবলীগ অনুসারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় বিশ্ব ইজতেমা আজকের রুপ লাভ করেছে। যতটুকু জানা যায়, বিশ্ব ইজতেমা সর্ব প্রথম শুরু হয় আজ থেকে ষাট বছর পূর্বে ১৯৪৬ইং সালে কাকরাইল মসজিদে। এরপর ১৯৪৮ইং সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের তৎকালীন হাজী ক্যাম্পে। এরপর ১৯৫৮সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে।

তখন এটা কেবল ইজতেমা হিসেবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু প্রতি বছর ইজতেমায় অংশগ্রহনকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ১৯৬৬সালে টঙ্গীর পাগার গ্রামের খেলার মাঠে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। ঐ বছরই প্রথম শুধু বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ অংশ গ্রহণ করায় বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।

পরবর্তীতে ১৯৬৭ সাল থেকে এ যাবত পর্যন্ত স্থায়ীভাবে বিশ্ব ইজতেমা নামে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীরে রাজউকের প্রায় ১৬০ একর (এখন প্রায় ১৭৫ একর) বিশাল ভূমির উপরে সামিয়ানা টানিয়ে নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বিগত ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকার উল্লেখিত জায়গায় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবার লিখিত অনুমতি প্রদান করেন।

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং পরিসংখ্যানের হিসাবে দুই পর্ব মিলিয়ে প্রায় ষাট থেকে সত্তর লাখ মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। এবং প্রায় ১০০টিরও বেশী দেশের প্রায় অর্ধ লক্ষ বিদেশি মেহমান এতে অংশগ্রহণ করেন।

তিন দিনের ইজতেমা শেষে আখেরী মুনাজাতে বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয় ইজতেমা ময়দান! ঐ দিন সরকার কর্তৃক ঐচ্ছিক ছুটি ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষ আখেরি মুনাজাতে শরীক হন। আখেরি মুনাজাতে বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি সমৃদ্ধি কামনা করে মুনাজাত করা হয়।

এই বিশ্ব ইজতেমা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বেশ কয়েক মাস ধরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষ পালাক্রমে মাঠ প্রস্তুতের কাজে অংশগ্রহণ করে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য আল্লাহর অশেষ কুদরতে পুরো ব্যবস্থাপনা ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ হলেও অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পুরো কাজ সম্পন্ন হয়, আলহামদুলিল্লাহ।

প্রতি বছরই ইজতেমা শেষে হাজার হাজার জামাত দেশের অভ্যন্তরে ও সারা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতী কাজের আঞ্জাম দেয়ার জন্য বের হন নিজের জান মালের কোরবানির দ্বারা। আল্লাহ আমাদের সবাকেই এই মোবারক মেহনতের সাথে পরিপূর্ণভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমীন।
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে