রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৮:৩০:৫৭

প্রাণের কবি ভালোবাসার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

প্রাণের কবি ভালোবাসার কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নাজমুন নাহার : "কেন মেঘ আসে হৃদয়াকাশে তোমারে দেখিতে দেয় না -মোহোমেঘে তোমারে দেখিতে দেয় না ,মাঝে মাঝে তব দেখা পাই চিরদিন কেন পাই না" - আজকে সকাল থেকেই এই গানটা মনে পড়ছে আর গুন গুন করে গাইছি । আহা আমার প্রাণের রবী , ভালোবাসার রবী --

 

রবীন্দ্র নাথ মানেই একটা যুগ , একটা সময় , একটা আবেশ , আবেগ , ভালোবাসা , আশা -গান , গীতিনাট্য , গল্প হলো শুরু -  শুরু হলো শেষ নেই । এক শতাব্দী পার হয়েও একটা মানুষ এত মানুষকে মুগ্ধ রাখতে পারেন তাঁর সৃষ্টিতে --

 

জীবনের প্রতিটা মুহুর্তের মধ্যেই তাঁকে পাই , ভালোবাসায় পাই , দুঃখে পাই , বেদনায় পাই , আনন্দে পাই , জয়ের সময় পাই , দেশকে ভালোবাসার সময় পাই , প্রিয়কে ভালবাসার সময় পাই।যিনি জীবনের প্রতিটি মূহুর্তকে চিত্রিত করতে পারেন তিনি একজন স্রষ্টা রূপে আবির্ভুত হন বাংলা সাহিত্যের , শুরু করেন এবং পূর্ণতা দান করেন ।

 

রবী্ন্দ্র নাথ ঠাকুরের গানের সাথে মিশে আছে যেন জীবন --কোথায় নাই তিনি  !!!!

 

আনন্দে -

কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা মনে মনে !

মেলে দিলেম গানের সুরের এই ডানা মনে মনে।

তেপান্তরের পাথার পেরোই রূপ-কথার,

পথ ভুলে যাই দূর পারে সেই চুপ্‌-কথার–

পারুলবনের চম্পারে মোর হয় জানা মনে মনে।।

সূর্য যখন অস্তে পড়ে ঢুলি মেঘে মেঘে আকাশ-কুসুম তুলি।

 

আহা কি কথা গানের !!

 

বরষা এলে

 

নীল নবঘনে  আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহিরে

 

অথবা মেঘের পরে মেঘ জমেছে,আঁধার করে আসে-আমায় কেন বসিয়ে রাখ

একা দ্বারের পাশে।

 

বৈশাখ এলেই রবীর গান শুরুতেই -

 

এসো, এসো, এসো হে বৈশাখতাপসনিশ্বাসবায়ে

মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,বৎসরের আবর্জনা

দূর হয়ে যাকযাক পুরাতন স্মৃতি,

যাক ভুলে যাওয়া গীতি,অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক।

 

প্রেমিক/প্রেমিকার ভেতরে যে বাস করে সে বলে

 

আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে

দেখতে আমি পাইনি তোমায় দেখতে আমি পাইনি --

 

ও আমার আপন হৃদয়গহন-

দ্বারে বারে বারে কোন্ গোপনবাসীর কান্নাহাসির গোপন কথা শুনিবারে-- বারে বারে -

 

একটা চঞ্চল মেয়ের রূপ চিত্রিত করেন --

 

মায়াবন বিহারীনি হরিণী -

গহন স্বপন সঞ্চারিনী

-কেন তারে ধরিবারে করি পণ অকারণ মায়াবণ বিহারিনী --

 

যে কালো মেয়ে সমাজে অবহেলিত তাকে তিনি তৈরী করেন সবচাইতে সুন্দরী মায়াবিনী , কাজল কালো চোখের মিষ্টি নায়িকা রূপে

 

কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি,

কালো তারে বলে গাঁয়ের লোক।

মেঘলাদিনে দেখেছিলেম মাঠে

কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ।

ঘোমটা মাথায় ছিলনা তার মোটে,

মুক্তবেণী পিঠের 'পরে লোটে--

 

নস্টালজিক সময়কে বন্দী করেন -

পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায়

ও সেই, চোখের দেখা প্রাণের কথা সে কি ভোলা যায়?

আয় আরেকটি বার আয়রে সখা প্রাণের মাঝে আয় মোরা,

সুখের দুখের কথা কবো প্রাণ জুড়াবে তাই

হায় মাঝে হল ছাড়াছাড়ি

গেলাম কে কোথায় আবার দেখা যদি হল সখা প্রাণের মাঝে আয়……

 

ভালোবাসায় রবীন্দ্রনাথ -

ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি

সেই সূরে সাগর কূলে বাঁধন খুলে

অতল রোদন উঠে দুলে সেই সূরে সাগর কূলে বাঁধন খুলে

অতল রোদন উঠে দুলে সেই সুরে বাজে মনে অকারনে

ভুলে যাওয়া গানের বাণী ভোলা দিনের ...

 

ভালোবাসার আকুলতায়

 

চক্ষে আমার তৃষ্ণা ওগো তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে ।

আমি বৃষ্টি বিহীন বৈশাখী দিন, সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে ।।

ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায়, মনকে সুদূর শূন্যে ধাওয়ায়-...

 

অথবা আমার মন মানে না--

দিনরজনী। আমি কী কথা স্মরিয়া এ তনু ভরিয়া পুলক রাখিতে নারি।

ওগো, কী ভাবিয়া মনে এ দুটি নয়নে উথলে নয়নবারি--. ওগো সজনি॥

 

যখন আমার সাথে কেউ নেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভরসা দেন

 

যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।

একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো রে ॥

যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা, যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়--

তবে পরান খুলে ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে ॥

 

সত্যিকার অর্থে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি  এক মহাসাগরের মতন  । তিনি মিশে আছেন জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে  , প্রতিটি সময়ে ।

 

ভালোবেসে যদি সুখ নাহি তবে কেন এ ভালোবাসা -  হে মহান সৃষ্টির স্রষ্টা আসলেও জানি না কেন ভালোবাসা । তোমার প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসা , শুধু আজকের দিনে নয় - প্রতিদিন প্রতিমূহুর্তে।

লেখক : নাজমুন নাহার, কবি ও প্রফেসর

২৯মে, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে