রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:৪৩:৩৩

নীরব মুখরতার একটি গল্প

নীরব মুখরতার একটি গল্প

পাঠকই লেখক ; খাতাটা হাতে নিয়ে বসে আছে এলিস। শরীর খুব একটা ভাল নেই। সর্দি লেগেছে হপ্তা দুয়েক হলো। সারাদিন নাক আর গালদুটো রক্তবর্ণ হয়ে থাকে ওর। মাঝে মাঝে তীব্র মাথাব্যাথায় কাতর হয়ে যায়। মাথাটা চেপে ধরে বিছানায় গুটিসুটি মেরে পড়ে থাকে। একটু পরে শিহান আসে। এলিসের মাথাটা কোলে তুলে নিয়ে আস্তে আস্তে বিলি কেটে দেয় চুলে। উল্টোটা হওয়া উচিৎ হলেও এটাই হয়।

এলিসের তখন মনেহয় মাথাব্যাথা কমে যাচ্ছে। শিহানের হাতে কী জাদু আছে? ভাবতে গিয়ে এলিস ঘুমিয়ে পড়ে। বেশিরভাগ দিনেই ঘুম ভাঙার পর শিহানকে দেখতে পায়না ও। অফিসে চলে যায়। আজও গেছে। খাবার টেবিলে ব্রেকফাস্ট যথারীতি টোস্ট আর মাখন। মাখনের বক্সটার নিচেই রাখা ছিলো খাতাটা। বড় বড় করে লেখা,
"ডাক্তারের কাছে যেয়ে ঘুরে এসো।"
-শিহান।

ডাক্তারের কাছে গেলে আবার ঘুরে আসবো কেন? ভাবে এলিস। ভাবতে ভাবতে খাওয়া শেষ করে। খাতাটা নিয়ে ঘরে এসে বসে। লেখাগুলো আরেকবার পড়ে। শিহানের হাতের লেখা জঘণ্য। এর জন্য স্কুলে থাকতে অনেক ঝাড়ি খেয়েছে সে। শুধরায়নি। সম্ভবত এটা শুধরানর জিনিস না।
খাতাটা উল্টেপাল্টে দেখে এলিস। অনেক পুরনো খাতা। আগের পৃষ্ঠাগুলোতে শিহানের আরও অনেক ছোট ছোট মেসেজ আছে। আগ্রহ নিয়ে সেগুলো পড়তে লাগল এলিস। অধিকাংশই অফিসে যাবার আগে লেখা। ধরণও প্রায় একই।

'খেয়ে নিয়ো।'
'সাবধানে থেকো।'
'আজ ফিরতে দেরী হবে। আমার জন্য বসে না থেকে খেয়ে নিবে।'
'টেক কেয়ার।'

'ছাদে কাপড় শুকোতে দিয়েছি। নামিয়ে এনো। সিঁড়ি বেয়ে ধীরে উঠবে ধীরে নামবে।'
এরকম আরও অনেক লেখা। এলিস পাতা উল্টায় আর পড়ে। মাঝে মাঝে এলিস আর শিহানের দ্বৈত কথোপকথনও রয়েছে। তাদের একটায় চোখ আটকে গেল এলিসের। এটা ওদের বিয়ের রাতের কথোপকথন।
"শিহান, আমাকে কেমন লাগছে?"
"ভাল লাগছে।"

"ব্যাস?"
"হুম।"
"কি হয়েছে? মন খারাপ? বিয়ে হয়েছে তোমার। অমন পেঁচার মতো মুখ করে আছ কেন?"
"আমার মুখ পেঁচার মতো জেনে ভাল লাগল।"
"হিহিহি। এনিওয়েইজ এবার বলো তোমার কী হয়েছে?"
"আমি ভাবছি।"

"কী ভাবছ?"
"আমাদের প্রথম যেদিন কথা হলো রাস্তার পাশে বসে, সেদিনের কথা।"
"ঐ নোটবুকটা আছে এখনো?"
"খুঁজতে হবে।"
শিহান আর এলিস মিলে খুঁজে বের করলো পুরনো নোটবুকটা। এলিস বলল,
"চলো একসাথেই ভাবাভাবি করি। হিহি।"

লেখাটা শেষ হয়ে গেল। এলিস হঠাৎ ভাবল সেই নোটবুকটা কী এখনো আছে? শিহানের স্টাডিরুমে গিয়ে বড় শেল্ফটায় খুঁজতে লাগল এলিস। বেশী দেরী হলোনা পেতে। সবুজ মলাটের মোটা নোটবুক। শিহানের হ-য-ব-র-ল লেখায় ভর্তি একেকটা পাতা। এলিস দ্রূততার সাথে পাতা উল্টে খুঁজতে লাগল লেখাটা। লাল ফিতে দিয়ে মার্ক করা একটা জায়গায় এসে থামল। পাওয়া গেছে। কালো কালির অক্ষরগুলোয় একবার হাতের স্পর্শ ছুঁয়ে দিলো এলিস।

মুহূর্তেই ফিরে গেল তিন বছর আগের বিকেলটায়। কলেজ ছুটির বিকেল। রাস্তার পাশে বসেছিল শিহান। একা। দূর থেকে তাকে দেখে এগিয়ে আসে এলিস। সেই বিকেলের অনেকগুলো বিকেল আগেই শিহানকে আলাদাভাবে দেখতে শুরু করেছিল এলিস। চুপচাপ, নিরীহ বাদামী চুলের ছেলেটার প্রতি নিজেকে সঁপে দেয়ার সিদ্ধান্তটা হয়তো তখনই নেয়া। কিন্তু শিহানকে কখনো জানান হয়নি সেকথা। ওকে একা বসে থাকতে দেখে এলিস ভাবল একটু পাশে বসবে। হয়তো কোন কথা হবেনা। শুধু সময় কাটবে দুজনে।

"আমি কী তোমার পাশে বসতে পারি শিহান?"
"পারো।", শিহান নোটবুকে লিখে দেখালো।
এলিস বসলো। চুপ করে আছে। কী বলবে ভাবছে। শিহান কী বুঝলো কে জানে, খসখস করে লিখলো,
"মনে হচ্ছে কিছু বলবে। যা বলার এখানে লেখ।"

খাতাটা বাড়িয়ে দিলো এলিসের দিকে। তারপরের কথাগুলো এরকম,
"আমি নাহয় মুখেই বলি।"
"না। আমি চাই আমার সাথে কেউ কথা বললে আমার মতো করেই বলুক।"
"ওকে। তুমি কেমন আছ শিহান?"

"এই মুহূর্তে অস্বস্তিতে আছি। তুমি আমার অস্বস্তির কারণ।"
"আমি কী চলে যাব?"
"আমার ধারণা তুমি যেটা বা যা বলতে চাও সেটা বলা হয়নি এখনো।"
"হুম।"

নীরবতা গ্রাস করলো কিছুক্ষণ। এলিসের মনের ভেতরটা তবু সরব। সামনের রাস্তায় গাড়ি যাচ্ছে। স্ট্রিটলাইট জ্বলে গেছে। এক লোক সেই আলোতে পেপার পড়ার চেষ্টা করছে। শিহান সেদিকে তাকিয়ে আছে। চোখ সরিয়ে খাতায় কিছু একটা লিখলো শিহান। এলিসকে দিলো পড়তে।
"এলিস, তুমি কী আমাকে পছন্দ করো?"

পুরো শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল এলিসের। একবার শিহানের দিকে তাকালো। ও স্ট্রিটলাইটের দিকে তাকিয়ে আছে।
"হ্যাঁ করি।"

"আমাকে পছন্দ করার কোন কারণ তো নেই এলিস। আমিতো বোবা। এভাবে সবসময় লিখে লিখে আমার সাথে কথা বলতে গিয়ে তুমি বিরক্ত হয়ে যাবে। ভেবে দেখ। কতকাল চলবে এভাবে? তুমি চলে যাও এলিস। তার কাছে যাও যে তোমাকে নাম ধরে ডেকে বলবে ভালোবাসি।"

এলিস অনেকক্ষণ, অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলো শিহানের দিকে। ভাবলেশহীন মুখটার দিকে। তারপর উঠে দাঁড়ালো। কেন যেন ওর মনে হচ্ছে এটা সঠিক সময় না। কয়েক পা এগিয়ে পিছে ঘুরে তাকালো এলিস। শিহান তাকিয়ে আছে ওর দিকে। ওর চোখের অদ্ভুত মায়ায় সেই তখনই বাধা পড়ে গেল এলিস চিরতরের জন্য। কিছু একটা ছিলো সেই চোখে। এলিস ফিরে গিয়ে নোটবুকে লিখলো,

"শিহান, তোমার চোখ কথা বলে। ডায়েরীর পাতা ফুরিয়ে যাক, কলমের কালি শুকিয়ে যাক, দুয়ে দুয়ে চার হাত বৃদ্ধ হয়ে যাক, আমি তোমার চোখের সাথে কথা বলে দীর্ঘ রাত কাটাতে পারবো।"

এলিস আর দাঁড়ায়নি সেখানে। এর পরের গল্প রূপকথার মতো। দুবছর একে অন্যের কাছাকাছি পাশাপাশি থাকার পর বিয়ে করে ফেলে এলিস আর শিহান। এতদিনের সব কথা জমা হয়ে আছে অনেকগুলো পাতায়। একত্র করলে হয়তো নতুন এনসাইক্লোপিডিয়া তৈরি হয়ে যাবে।

চোখটা মুছে নোটবুকটা বন্ধ করে এলিস। অদ্ভুত ভালোলাগায় মন ভরে গেছে ওর। ভাবলো আজ শিহানের প্রিয় খাবার রান্না করবে। খেয়াল করলো নোটবুকটা এতদিনের পুরনো অথচ তাতে বিন্দুমাত্র ধূলো জমেনি। তারমানে কী শিহান এখনো এটার যত্ন করে নিয়মিত? হতে পারে।

শিহানের রান্না খেতে খেতে নিজেই রান্না করা ভুলে গেছে কিনা ভাবতে ভাবতে কিচেনে ঢুকলো এলিস। কিন্তু বেশ ভালোভাবেই রান্নার কাজ শেষ করে এসে টিভি অন করলো সে। দেখার মতো কিছু নেই দেখে আবার গেল শিহানের স্টাডিরুমে। বুকশেল্ফ থেকে পড়ার জন্য কয়েকটা বই নামালো সে। ওখানেই বসে পড়া শুরু করলো।

কিন্তু মন বসাতে পারলোনা। কলেজ জীবনের দিনগুলোর কথা ঘুরেফিরে মনে পড়ে যাচ্ছে। সেই শিহান, যে শিহান কালো ব্লেজার আর সাদা ক্যাপ মাথায় কলেজে আসতো। সতর্ক দৃষ্টি ফেলে দেখত আশেপাশের প্রতিটা জিনিস। একদম চুপচাপ বসে থাকতো কখনো লেকের ধারটায় অথবা ওক গাছের গোড়ায়। আর কী যেন লিখত ডায়েরীতে। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে ঠোঁটে একচিলতে কৃতজ্ঞতার হাসি এঁকে লিখে দেখাতো উত্তর।

সেবার ও যখন পরীক্ষায় হায়েস্ট মার্ক পেলো তখন কোন এক কারণে ওদের এক প্রফেসর ওকে নিয়ে ঠাট্টা করেছিল ক্লাসের সবার সামনে। শিহানের হয়তো সেটা সহ্য হয়নি। কলেজ আওয়ার শেষে মাঠভর্তি লোকজনের মাঝে ওক গাছের ডাল ভেঙে সেই প্রফেসরকে পিটিয়েছিল শিহান। কী ভয়ঙ্কর রাগ! শিহানকে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হলো। কিন্তু তারপরেও সে প্রায়ই যেত লেকের ধারে, ওক গাছটার কাছে। চুপচাপ, শান্ত, বসন্তের আকাশের মতো। এলিস অনেক আগে থেকেই আকৃষ্ট ছিলো শিহানের প্রতি। কখনো মুখ ফুটে বলতে পারেনি। যেদিন বলতে চাইলো সেদিন বলার আগেই শিহান বুঝে ফেলল। এলিসের কখনো এটা জানা হয়নি কীভাবে জানতে পেরেছিল শিহান।

বইয়ের পাতার মাঝে একটা জিনিস দেখে অবাক হলো এলিস। ডায়েরীর একটা পাতা আঠা দিয়ে লাগানো। দেখতে বইয়ের একটা পাতার মতোই লাগছে। শিহান আর এলিসের কোন এক ভাঙাচোরা আলাপের কাগজ।
"এলিস, লেবু গাছটার পাতা বারান্দায় পৌঁছে গেছে।"
"লেবুপাতার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে?"
"খেয়াল করিনি তো। দেখে আসি।"

"না থাক.. দেখে ফেললেই জানা হয়ে যাবে। অজানা থাক। কৌতুহল থাক।"
"এত কঠিন করে কথা বলো কেন?"
"শিহান মেঘটা দেখো।"
"দেখলাম। সাদা মেঘ।"
"হুম.. মেঘটা কার মতো দেখতে? শিহান না এলিস?"
"এলিস।"
"উঁহু, শিহান। মেঘটার গালভাঙা।"
"কী যে বলো!"

এলিস ঐদিন বিকেলের শিহানের বোকা বোকা চেহারাটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে কল্পনায়। আনমনেই হেসে ফেললো ও। এবার আরেকটা বই হাতে নিলো। এটার ভেতরেও আরেকটা কাগজ দেখা যাচ্ছে। ভাঁজ করা। শিহান এসব বইয়ের ভেতর গুঁজে রেখেছে কেন?

"দূর থেকে সবাইকে দেখে দেখে অভ্যস্ত ছিলাম আমি। হয়তো নিজের অক্ষমতাটাই আমাকে বারংবার আটকেছে সবার সাথে মিশতে, সবার সাথে হাসতে। একটা মানুষের জটলা, সবাই কথা বলছে, হাসছে কিন্তু তাদের মাঝে একজন চুপ করে বসে আছে, এর ওর দিকে অসহায় দৃষ্টি ফেলছে, বিষয়টা আজব এবং বেমানান। আমি বোবা। এটা আমার কতবড় খুঁত আমি জানিনা। তবে নিজের কাছে নিজেকে একটু ছোট ভাবার জন্য মনে হয় যথেষ্ট।

কীজানি, এটা আমার নিজের মতামত। তবু কখনো কারো সাথে নিজে মিশতে পারিনা। একটা সূক্ষ্ণ আক্ষেপের রেখা তো আছেই। এরকম একটা পরিস্থিতিতে থেকে ভালোবাসার কথা চিন্তা করা বাহুল্য। কিন্তু কী আশ্চর্য! ভালোবাসা তো হয়েই গেল। আমি সবসময় চেয়েছি নিজের মতো থাকতে। আলাদা একটা জগৎ, যেখানে সবকিছু নির্বাক, নিশ্চুপ। আমার মতো যারা একা থাকতে চায় তারা থাকবে, লেকের ঐ পাশের ওক গাছটাও থাকবে। কোলাহলমুক্ত যে জগৎ তার চেয়ে শান্তির জায়গা আর কী হতে পারে। কিন্তু আমার এই বাস্তব জগতেই একগাদা কোলাহল নিয়ে এলিস এসে হাজির হলো। কীভাবে কী হয়ে গেল। আমারও ভাল লাগতে শুরু করলো সেটা। সহনীয় ডেসিবেলের কোলাহল। হা! হা!

নিজেকে একটু আগলে রাখার চেষ্টা আমার সবসময় ছিলো। এতে আমার কথা না বলতে পারার 'ক্ষমতা' আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। গুটিকয়েক লোক ছাড়া কেউই পাশ মাড়াতো না। আমার ভালো লাগত বিষয়টা। কারণ নিজেকে রিজার্ভড রাখার মধ্যে একটা আনন্দ আছে। সবার সাথে সবার মতো মিশে যাও কিন্তু সবার থেকে আলাদা হওয়ার সাথে সাথে অন্য কেউ হয়ে যাও। আমি কখনই চাইনি নিজেকে সবার সামনে একেবারে খুলে রেখে দিতে। আমার সব কথা কেউ জানুক, ব্যাপারটা অদ্ভুত। আমি মনে করি একটা মানুষ আরেকজন সম্পর্কে যত বেশী জানে, তত বেশী সেই মানুষটার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কুব বেশী প্রেডিক্টেবল মানুষদের প্রতি আগ্রহের পারদ নিচের দিকে নেমে যাওয়াই স্বাভাবিক। আর এর মধ্যে যদি 'ভালোবাসা' শব্দটা যোগ হয় তাহলেই তো, গেম ওভার। এলিস আমার 'গেম ওভার' করে দিয়েছে। এতকিছু করেও আমি আটকে রাখতে পারিনি নিজেকে। এখন আমার পুরোটা জগৎ জুড়ে এলিসের কোলাহল। এই কোলাহল হোক চিরন্তন। আমার নীরব জীবনে এলিস যে রঙটা ঢেলে দিয়েছে সেটা কখনো মলিন না হোক।

*এনিভার্সারী এসে যাচ্ছে। এলিসকে কী গিফট দিলে ও খুশি হবে ভেবেই পাচ্ছিনা। এলিসকে কী জিজ্ঞেস করবো?"
বইগুলো আগের জায়গায় রেখে এলিস বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। বিকেল হয়ে গেছে। শিহানের ফিরে আসার সময় হয়ে গেছে। এলিস লেবুপাতার গন্ধ পাচ্ছে। তীব্র গন্ধ। চুলগুলো বাঁধা ছিলো। খুলে দিয়ে সূর্যের দিকে মুখ করে দাঁড়ালো সে। ভাবছে, ওদের এই ছোট্ট ঘরটায় এত সুখ কেন? আচ্ছা শিহান কী ঠিক করতে পেরেছে গিফট হিসেবে কী দেবে? পারেনি মনে হয়। এসব আবোল তাবোল ভেবে ঘরে বসে অপেক্ষা করতে লাগল এলিস।

রাত ১১ টা। শিহান ফেরেনি। খাবার সাজিয়ে বসে আছে এলিস। একের পর এক মেসেজ দিয়েই যাচ্ছে। কোন উত্তর নেই। অফিসে ফোন করে জানলো অফিসে কেউ নেই। সবাই চলে গেছে। শিহানও নাকি সবার সাথেই বেরিয়েছে। তাহলে ফিরলনা কেন এখনো? এলিসের খুব কান্না পাচ্ছে। কী করা উচিৎ ভেবে পাচ্ছেনা। চিন্তায় বিভোর হয়ে আর অপেক্ষা করতে করতে একসময় ঘুমিয়েই গেল এলিস।
সকালে ঘুম ভাঙল এলিসের। চোখ মুছে সোজা হয়ে বসতে শিহানের কথা মনে পড়লো। টেবিলের ওপরে কোন নোট নেই। তারমানে ফেরেনি ও। এলিস আবার চিন্তায় পড়ে গেল। এমন সময় ওর নজর পড়লো দরজার পাশে রাখা অ্যাকুরিয়ামে। দুটো গোল্ডফিশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। গতরাতেও ছিলোনা এগুলো।
অ্যাকুরিয়ামের কাছে যেতে সেখানে একটা নোট পেল এলিস।

"ছাদে এসো।"
ছাদের দরজা ঠেলে ঢুকতেই এলিস দেখলো শিহান দাঁড়িয়ে আছে। মুখে হাসি। ওর পেছনের আকাশে সূর্য কেবল উঁকি দিয়েছে। শিহানের হাতে একটা বড় কাগজে লেখা,
"হ্যাপী এনিভার্সারী এলিস।"
এলিস শিহানের চোখের ভাষা পড়তে পারে। সেখানে লেখা,
"ভালোবাসি।"

লেখক : তাসমিনুল করিম ইমু

৭ নভেম্বর২০১৪/এমটিনিউজ২৪/এসএম/কা.ক./এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে