সোমবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:০৫:২৮

আমেরিকায় বাঙালি রেস্তোরাঁগুলোতে কর্মী সঙ্কট

আমেরিকায় বাঙালি রেস্তোরাঁগুলোতে কর্মী সঙ্কট

প্রবাস ডেস্ক : বেহাল অবস্থায় আমেরিকায় বাঙালি রেস্তোরাঁগুলো।  চরম সঙ্কটে পড়েছে রেস্তোরাঁগুলো৷ কর্মী সংকট, অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব এবং আইনি নানা কড়াকড়ি৷ যার জেরে নাজেহাল বাঙালি রেস্তোরাঁগুলো৷ পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, প্রতি সপ্তাহে অন্তত পাঁচ থেকে ছয়টি রেস্তোরাঁর মালিকানা বদল হচ্ছে বা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন রেস্তোরাঁর মালিক বলছেন, এতদিন বাংলাদেশ এবং কলকাতা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের কাজে লাগিয়ে তারা কর্মী সংকট মোকাবেলা করছিলেন। ২০০৯-১০ সালে যেখানে সপ্তাহে ১০০ ডলারের  বিনিময়ে রেস্তোরাঁয় পর্যাপ্ত কর্মী পাওয়া যেত, সেখানে এখন সপ্তাহে ২৫০ ডলার দিয়েও কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না।  

বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজে কড়াকড়ি ও বিদেশ থেকে কর্মী আনায় নানা শর্ত আরোপ করার কারণে সঙ্কট ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে৷ নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশ থেকে রেস্তোরাঁ কর্মী আনতে হলে বছরে প্রায় ৩০ হাজার ডলার বেতন দিতে হবে।

কিন্তু আমেরিকায় প্রবসী ভারতীয় এবং বাংলাদেশিদের সংখ্যা তো মোটেই কম নয়৷ তাহলে বাঙালি মালিকানাধীন রেস্তোরাঁগুলোতে কর্মী সঙ্কটের কারণ কী? রেস্তোরাঁরা মালিকেরা বলছেন, বাঙালি রেস্তোরাঁর কাজ অবাঙালি কর্মীদের দিয়ে হয় না।  বাঙালি রেস্তোরাঁর মসলা মাখা তৈলাক্ত খাবারগুলো যুক্তরাজ্যে ‘ইন্ডিয়ান কারি’ বলেই পরিচিত।  

‘কারি’ খ্যাত বাঙালি খাবারগুলো তৈরি ও পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক ঘনিষ্ঠতা দরকার।  পূর্ব ইউরোপের দেশ থেকে আসা কর্মীদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু তারা বাঙালি রান্না ও রেস্তোরাঁ চালানোর কাজ রপ্ত করতে পারেননি৷

অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব ও আইনি নানা কড়াকড়ির কারণেও ভুগছেন রেস্তোরাঁ মালিকরা।  বেশ কয়েকজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীর মতে, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে রেস্তোরাঁয় অতিথি সংখ্যা কমে গেছে।  চাইলেই আগের মত ব্যাঙ্ক ঋণও পাওয়া যায় না।  

তাদের মতে, আবার যারা কাঁচামাল সরবরাহ করেন তারাও আগের মত ক্রেডিট সুবিধা দিতে পারছেন না।  তার ওপর আছে কর্মী নিয়োগ, লাইসেন্স ও খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইনের কড়াকড়ি।  ওয়ার্ক পারমিট নেই এমন কর্মী নিয়োগের জন্য সর্বোচ্চ ২০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানার শিকার হয় রেস্তোরাঁগুলো।

বাঙালিদের মধ্যে একজন প্রভাবশালী রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী বজলুর রশিদ বলেন, তার পরিবারের ১৫টি রেস্তোরাঁ ছিল।  এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র দুটি। আরেক ব্যবসায়ী মুকিম আহমদ বলেন, তার চারটি রেস্তোরাঁর মধ্যে সর্বশেষটি বিক্রি করেছেন গত মাসে।  কর্মী সঙ্কটের পাশাপাশি আইনি নানা ঝক্কি ঝামেলার কারণে তারা রেস্তোরাঁ ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন৷

রেস্তোরাঁ মালিকদের সংগঠনগুলো বিদেশ থেকে কর্মী আনার নিয়ম শিথিল করার জন্য মার্কিন সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে৷ তবে সরকারের বক্তব্য, স্থানীয় লোকবলকে প্রশিক্ষণ দিয়েই এই কর্মী সংকট মোকাবিলা করতে হবে।  এমন অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাঙালিদের রসনা তৃপ্তিতে সমস্যা হচ্ছে৷
৪ সেপ্টেম্বর,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে